নিজস্ব প্রতিবেদক
চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে ছাত্রদলের সাবেক নেতা কবির হোসেন হত্যা মামলায় বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘটনাটি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানী। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তিরা হলেন-এনায়েতপুর থানা যুবদলের আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন জহুরুল (৪৮) এবং সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন বিএনপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল মীর (৫৫)। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে র্যাব-২ এর একটি দল জহুরুলকে গ্রেফতার করে। এরপর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এনায়েতপুর গ্রাম থেকে জামাল মীরকে আটক করে এনায়েতপুর থানা পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ বিকেলে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত একটি ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থানীয় দুটি গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ছাত্রদলের সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন (২৮) গুরুতর আহত হন।
তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে খাজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকার একটি বেসরকারি ক্রেটিক্যাল কেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর, ২২ মার্চ রাতে নিহত কবির হোসেনের বড় ভাই হযরত আলী হাফিজ এনায়েতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতার নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন—এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মনজুর রহমান মঞ্জু শিকদার, সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিঠু মীর, সদস্য সচিব কালাম শিকদার, যুবদল নেতা জাহিদ হোসেন জহুরুল, থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসান সোহাগ শিকদার এবং থানা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সেলিম রেজার নাম সহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও মামলায় ৮০ থেকে ৯০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, মামলার অন্যান্য আসামিদের চিহ্নিত করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং নতুন করে আরও গ্রেফতার হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিহত কবির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং সদিয়া চাঁদপুর এলাকায় সংগঠনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।